অনলাইনে নিরাপদ লেনদেন ও কেনাকাটার উপায়

অনলাইনে নিরাপদ লেনদেন ও কেনাকাটা
অনলাইনে লেনদেন ও কেনাকাটা করার পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। ক্রেডিট কার্ড বা অনলাইন ওয়ালেটের তথ্য ও এতে থাকা টাকার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে লেনদেন ও কেনাকাটা করতে হবে। কোনো সুপারশপ বা দোকানে আমরা যেভাবে নিরাপত্তার সাথে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য প্রদান করে কেনাকাটা করি একি ভাবে অনলাইনেও আমাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করতে হবে। সামান্য একটু ভুল, বড় বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। চলুন আমরা জানি অনলাইনে লেনদেন ও কেনাকাটা করার সময় ক্রেডিড কার্ড বা অনলাইন ওয়ালেটের তথ্য কিভাবে নিরাপদ রাখতে হবে।

নিরাপদ ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে:
অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে নিরাপদ ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে। ব্রাউজারের নিরাপত্তা দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা সহজেই তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। আবার আমরা হয়ত এমন ব্রাউজার ব্যবহার করে থাকতে পারি যা তৈরি করা হয়েছে ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে। তাই আমাদের ক্রেডিট কার্ড বা অনলাইন ওয়ালেটের তথ্যের নিরাপত্তায় নিরাপদ ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে গুগল ক্রোম, সাফারি, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, মজিলা ফায়ারফক্স ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেনদেনের আগে ওয়েবসাইটির নিরাপত্তার দিক যাচাই করে নিতে হবে:
ওয়েবসাইটি যদি “http” এর সাথে ব্রাউজ করে থাকে তবে এই সাইটে আমরা লেনদেন থেকে বিরত থাকব। তবে “http” এর সাথে “s” যুক্ত অথাৎ “https” ওয়েব লিংক যুক্ত ওয়েবসাইট সমূহে অন্যান্য দিক যাচাই করে কেনাকাটা করা যেতে পারে।

ফিশিং ওয়েবসাইট কিনা যাচাই করা ও লোভনীয় অফার এড়িয়ে চলা:
আসল ওয়েবসাইটের মতো দেখতে অবিকল নকল ওয়েবসাইট গুলোই ফিশিং ওয়েবসাইট। এইসব ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় আমাদের বোকা বানিয়ে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। আমরা সচরাচর যেসকল ই-কমার্স সাইটের সাথে পরিচিত অবিকল ওয়েবসাইট তৈরি করে ই-ইমেল বা অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যে কাউকে ফাঁদে ফেলা সহজ। তাই কেনাকাটা করার আগে ওয়েবসাইটি আসল কিনা যাচাই করতে হবে।

সুপরিচিত ও বিশ্বাসযোগ্য ওয়েব সাইট থেকে কেনাকাটা করা:
খ্যাতি সম্পন্ন ও সুপরিচিত ওয়েব সাইট থেকে কেনাকাটা করার চেষ্টা করাই ভাল। অনলাইনে লেনদেনের পূর্বে কোনো কিছু সন্দেহ জনক মনে হলে ঐ ওয়েবসাইট এড়িয়ে চলতে হবে।

লেনদেনের সাথে যুক্ত ই-মেইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে:
কার্ড বা অনলাইন ওয়ালেট থেকে লেনদেনে ই-মেইলের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন কোড যাচাই করে থাকলে সেই ই-মেইলের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। ই-মেইলে 2-Step Verification ব্যবহার করে নিরাপদ রাখা যায়। এবং গোপনীয় তথ্য সমূহ অন্য কারো সাথে সরাসরি বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে শেয়ার করা থেকে বিরত থেকে ই-মেইল নিরাপদ রাখতে হবে।

ওয়েবসাইটি ব্যাক্তিগত ও লেনদেন সংশ্লিষ্ট তথ্য কতটুকু নিরাপত্তা দিবে যাচাই করতে হবে:
আমরা যে ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা করতে যাচ্ছি সেই ওয়েবসাইটি আমাদের তথ্যের কতটুকু নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা দিবে তা ওয়েবসাইট থেকে জেনে নিতে হবে। আপনি যদি মনে করেন আপনার কাছ থেকে অতিরিক্ত ও অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য চাচ্ছে এবং তা অপ্রয়োজনীয়। তবে ঐ ওয়েবসাইট এড়িয়ে চলতে হবে।

পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে লেনদেন না করা:
পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে আমরা যে ওয়েবসাইট গুলোতে লগইন ও লেনদেন করব তা চাইলেই যে কেউ দেখে নিতে পারে। আমাদের ব্রাউজার ডাটা থেকে অনলাইন পাসওয়ার্ড, লেনদেনের তথ্য, কার্ডের পিন নাম্বার থেকে যাবতীয় তথ্য বেহাতের ঝুঁকি থাকে। তাই পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে অনলাইনে লেনদেন করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।

পিসি বা ল্যাপটপে এন্টি ভাইরাস ব্যবহার করা:
পিসি বা ল্যাপটপের মাধ্যমে অনলাইনে লেনদেন ও কেনাকাটা করে থাকলে পিসির নিরাপত্তার দিকে নজর দিতে হবে। পিসি বা ল্যাপটপে থাকা ম্যালওয়ার বা ভাইরাস শনাক্তে মানসম্পন্ন এন্টি ভাইরাস ব্যবহার করতে হবে।

দুর্ঘটনা বশত অনলাইনে সাইবার ক্রাইম ও প্রতারণার শিকার হলে বাংলাদেশ পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯ এ কল করতে হবে।